মোট পৃষ্ঠাদর্শন

বৃহস্পতিবার, ৭ জুলাই, ২০১১

আঞ্চলিক ইতিহাস

ইতিহাস চর্চার একটি বিশেষ ভাগ হল ‘আঞ্চলিক ইতিহাস’।আঞ্চলিক ইতিহাস বলতে বোঝায় কোনো একটি নির্দিষ্ট ভৌগলিক অঞ্চলের অতীত চর্চা। সেক্ষেত্রে সামগ্রিক ইতিহাস চর্চায় একটি অঞ্চলের ভৌগলিক, ঐতিহাসিক, সামাজিক, রাজনৈতিক,অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের বিবর্তনের অনেক তথ্য ও তার বিশ্লেষণই উপেক্ষিত থেকে যায় যা আঞ্চলিক ইতিহাস চর্চায় নিখুঁতভাবে লিপিবদ্ধ হয়। বিট্রিশযুক্তরাজ্য, আমেরিকা যুক্ত্ররাষ্ট্রে এই চর্চা বিশেষ প্রসার লাভ করেছে আমেরিকান লোকাল হিস্ট্রি নেটওয়ার্ক এমনই একটি ওয়েব ভিত্তিক আঞ্চলিক ইতিহাস চর্চার কেন্দ্র। বিট্রিশযুক্তরাজ্যের ন্যাশানাল আর্কাইভস আঞ্চলিক ইতিহাস নথিবদ্ধের এক অপূর্ব উদাহরণ  (http://www.nationalarchives,gov.uk/records/)।ভারতীয় উপমহাদেশের একজন বাসিন্দা এবং ইতিহাস সচেতন মানুষ হিসাবে, আমার প্রত্যাশা এদেশে পথে প্রান্তরে, গ্রাম নগরে মণিমুক্তোর মতো ছড়িয়ে থাকা আঞ্চলিক ইতিহাস নথিবদ্ধকরণ ও ওয়েবভিত্তিক আর্কাইভ নির্মিত হোক যা আমাদের মতো আত্মবিস্মৃত জাতিকে তার জাতির ঐতিহাসিক বিবর্তনের ও বিপুল বৈচিত্র্যময় অতীত যা স্থানিক বৈশিষ্ট্যে বিশেষিত তা সমন্ধে সচেতন করুক। বিভিন্ন সরকারি,অসরকারি,ব্যক্তিগত সংগ্রহে তালাবন্ধ আঞ্চলিক ইতিহাস নতুন প্রযুক্তিকে আশ্রয় করে মুক্ত হোক, তা না হলে আমরা আত্মজ্ঞান লাভ করতে পারব না। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, সুন্দরবন অঞ্চল আজ আমাদের কাছে পরিচিত ম্যানগ্রোভ বণাঞ্চল হিসাবে অথচ চন্দ্রকেতুগড়, জটার দেউল,প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কৃত নানা প্রত্নসামগ্রী যদিও বলে প্রাচীন সভ্যতার বিকাশের পটভূমি হিসাবে এই অঞ্চলের অন্য এক গল্প যা শুধুমাত্র আঞ্চলিক ইতিহাস চর্চার মধ্যে দিয়েই উদ্‌ঘাটিত হওয়া সম্ভব।

সোমবার, ১৬ মে, ২০১১

বাঙালীর প্রাত্যহিক জ়ীবনে নান্দনিকতার ছোঁয়া ও রবীন্দ্রনাথ


আজ প্রায় একশত বছরের অধিক সময়কাল বাঙালীর প্রাত্যহিক জ়ীবনের ছন্দ কেমন হবে তার তালটি রবীন্দ্রনাথের সৃষ্টি ও তার জ়ীবন যাপনের ধরন দিয়ে গভীরভাবে প্রভাবিত হয়ে চলেছে। আমাদের জনসাধারণের দৈনন্দিন জীবনে যখন প্রাচীন ভারতীয় সভ্যতার নান্দনিকতার ধারাটি প্রায় শুষ্ক হয়ে এসেছিল তখন প্রাচ্য-পাশ্চাত্যের সভ্যতার মন্থনে অনেক হলাহলের সাথে ‘রবীন্দ্রনাথ’ নামক অমৃত কুম্ভটি এসেছিল। আজ তাঁর সার্ধশতবর্ষের জন্মদিনে প্রণাম জানাতে গিয়ে, কেবলই মনে হয় তিনি আমাদের প্রাত্যহিক জ়ীবনের প্রতিটি  কর্মকে কেমন নান্দনিকতার ছোঁয়া দিয়ে গেছেন। ‘মংপুতে রবীন্দ্রনাথ’ গ্রন্থে যখন অশীতিপর কবির বাঙালী রমনীর পোশাক নিয়ে স্মৃতিচারণের কথা পড়ি, তখন বুঝি তার দৈনন্দিনে নান্দনিকতার পরশ নিয়ে গভীর ভাবনা। তাঁর শান্তিনিকেতন আশ্রমে বিভিন্ন উসবে গানে, কবিতায়, আলিম্পনের সজ্জায় বা  উসবে মাতোয়ারা আশ্রমবাসীর অঙ্গসজ্জায় তিনি আমাদের শিখিয়েছিলেন কেমন হবে আলোকিত, সভ্য বাঙালীর উসব প্রাঙ্গন – যেখানে  সমগ্র বিশ্ব এসে মিশবে।তাঁর আশ্রম প্রাঙ্গনের বাসগৃহগুলির গৃহসজ্জা আমাদের শিখিয়েছে  জাঁকজমক নয় নান্দনিকতার বোধ দিয়ে অতিসাধারণ, সহজলভ্য বস্তু দিয়ে নির্মিত হস্তশিল্প দিয়ে অন্দরসজ্জা করতে। একটু খেয়াল করলে চোখে পড়ে বাঙালী শিশুর নামকরণে আজও রাবীন্দ্রিক নান্দনিকতার স্পর্শ। অবসরের বেতের চেয়ারটিতে হেলান দিয়ে কফির কাপে চুমুক দেওয়ার সময়ও আমরা আধুনিক বাঙালী যে নান্দনিকতার সন্ধান করি বা অফিস যেতে যে ঝোলা ব্যাগটি কাঁধে নিই কিংবা দেওয়ালে যে মোম বাটিকের ছবি লাগাই তা তাঁর জ়ীবনভর নান্দনিকতার সাথে যাপনের সাক্ষ্য আর আমাদের দিয়ে যাওয়া উত্তরাধিকার।

বৃহস্পতিবার, ৫ মে, ২০১১

বইয়ের কথা

সম্প্রতি অন্নদাশঙ্কর রায়ের পথে প্রবাসে বইটি পড়তে পড়তে ভারী অবাক হয়েছি। সেই সময়কালের ইউরোপের সমাজ জীবনের যে চিত্র লেখক এঁকেছেন তা আজকের ভারতবর্ষের নগরজ়ীবনের প্রেক্ষাপটে কি ভীষণ প্রাসঙ্গিক, যেন ১৯২৭-১৯২৯ এর লন্ডনের জীবন প্রবাহ এসে মিশেছে একবিংশের কলকাতায়।সভ্যতার সোপানগুলি কাল নির্বিশেষে একই রকম তার আপন বৈশিষ্ট্য বজায় রেখে।