ইতিহাস চর্চার একটি বিশেষ ভাগ হল ‘আঞ্চলিক ইতিহাস’।আঞ্চলিক ইতিহাস বলতে বোঝায় কোনো একটি নির্দিষ্ট ভৌগলিক অঞ্চলের অতীত চর্চা। সেক্ষেত্রে সামগ্রিক ইতিহাস চর্চায় একটি অঞ্চলের ভৌগলিক, ঐতিহাসিক, সামাজিক, রাজনৈতিক,অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের বিবর্তনের অনেক তথ্য ও তার বিশ্লেষণই উপেক্ষিত থেকে যায় যা আঞ্চলিক ইতিহাস চর্চায় নিখুঁতভাবে লিপিবদ্ধ হয়। বিট্রিশযুক্তরাজ্য, আমেরিকা যুক্ত্ররাষ্ট্রে এই চর্চা বিশেষ প্রসার লাভ করেছে আমেরিকান লোকাল হিস্ট্রি নেটওয়ার্ক এমনই একটি ওয়েব ভিত্তিক আঞ্চলিক ইতিহাস চর্চার কেন্দ্র। বিট্রিশযুক্তরাজ্যের ন্যাশানাল আর্কাইভস আঞ্চলিক ইতিহাস নথিবদ্ধের এক অপূর্ব উদাহরণ (http://www.nationalarchives,gov.uk/records/)।ভারতীয় উপমহাদেশের একজন বাসিন্দা এবং ইতিহাস সচেতন মানুষ হিসাবে, আমার প্রত্যাশা এদেশে পথে প্রান্তরে, গ্রাম নগরে মণিমুক্তোর মতো ছড়িয়ে থাকা আঞ্চলিক ইতিহাস নথিবদ্ধকরণ ও ওয়েবভিত্তিক আর্কাইভ নির্মিত হোক যা আমাদের মতো আত্মবিস্মৃত জাতিকে তার জাতির ঐতিহাসিক বিবর্তনের ও বিপুল বৈচিত্র্যময় অতীত যা স্থানিক বৈশিষ্ট্যে বিশেষিত তা সমন্ধে সচেতন করুক। বিভিন্ন সরকারি,অসরকারি,ব্যক্তিগত সংগ্রহে তালাবন্ধ আঞ্চলিক ইতিহাস নতুন প্রযুক্তিকে আশ্রয় করে মুক্ত হোক, তা না হলে আমরা আত্মজ্ঞান লাভ করতে পারব না। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, সুন্দরবন অঞ্চল আজ আমাদের কাছে পরিচিত ম্যানগ্রোভ বণাঞ্চল হিসাবে অথচ চন্দ্রকেতুগড়, জটার দেউল,প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কৃত নানা প্রত্নসামগ্রী যদিও বলে প্রাচীন সভ্যতার বিকাশের পটভূমি হিসাবে এই অঞ্চলের অন্য এক গল্প যা শুধুমাত্র আঞ্চলিক ইতিহাস চর্চার মধ্যে দিয়েই উদ্ঘাটিত হওয়া সম্ভব।