আজ একবিংশ শতকে দাঁড়িয়ে গড়পড়তা বাঙালি নারীর সামাজিক ইমেজ ঠিক কেমন? এই প্রশ্নের উত্তর খোঁজা আর আত্মজিজ্ঞাসা একই. সমাজের নানাস্তরের মেয়েদের সাথে কথা বলে, প্রতিদিনের ঘটনাক্রম, মিডিয়ায়, টিভি সিরিয়াল, সিনেমায় মেয়েদের ভূমিকার যে উপস্থাপন দেখে মনে হয়েছে গত পঞ্চাশ বছরে আমাদের আর্থিক অগ্রগতি হলেও মেয়েরা পুরুষতন্তের বেড়াজাল কেটে মানসিকভাবে খুব বেশি মুক্ত মনের হতে পারিনি। বিবাহ নামের সামাজিক প্রতিষ্ঠান মেয়েদের সবকিছুর নিয়ন্ত্রক। সব নিজ্বসতা বিসর্জন দিয়ে পরিবারের কল্যানই যেন তার জীবনের একমাত্র উদ্দেশ্য। পুরুষতন্তের বন্ধনগুলো ধর্ম, সামাজিকতা, সম্পর্কের চিরন্তরতা - নানা অছিলায় মেয়েদের আষ্টেপৃষ্টে বেঁধে রেখেছে। যুক্তির থেকে আবেগ তাদেরকে পিছন পানে টেনে রেখেছে। এখনো এদেশের মেয়েরা মনে করে অপরের তা সে বাবা, মা, স্বামী, সন্তান - যেই হোক তার বা তাদের যুক্তিহীন আবদার রাখার দায় তার সর্বোপরি, তা যদি আত্মগ্লানিকর হয় তাও। যখন মনে হয় এই সমাজে মেয়েদের আত্মপরিচয় নির্মাণ অসম্ভব তখন হঠাৎ জানতে পারি উত্তর, উত্তর-পশ্চিম ভারতের মীরাপন্থী মেয়েদের কথা. সাধিকা মীরাবাঈকে নতুন করে চিনতে মন চায়। এক একলা মেয়ের অন্যরকম পথ চলার গল্প, সমাজের প্রচলিত প্রথাকে একপাশে সরিয়ে রেখে নতুন জীবনশৈলী চর্চার গল্প। মীরাপন্থীরা আধুনিক শিক্ষা, সুযোগ সুবিধা না পেলেও মন থেকে তারা মুক্ত, স্বাধীন। এই স্ব এর অধীন হওয়াটা খুব জরুরি. মুক্ত, উদার মনন চর্চা ছাড়া আমরা কিছুতেই পুরুষতন্তের বানিয়ে দেওয়া ইমেজের খাঁচা থেকে মুক্তি পাবো না। এখন সময় এসেছে পুরানো চাপিয়ে দেওয়া ইমেজ ভেঙে নতুন ইমেজ গড়ার যেখানে মন হবে মুক্ত, যুক্তিবাদী, উদার, অতীতের ভারমুক্ত।