আজ বসুন্ধরা দিবস, বিগত ৫০ বছর মানুষ এই দিনটা পালন করছে পৃথিবীকে ভালো রাখার, ভালোবাসার অঙ্গীকার করতে। কিন্তু গত ৫০ বছরে পৃথিবীর স্বাস্থ্য ক্রমাগত খারাপ হয়েছে মানব সভ্যতার ক্রম উন্নয়নে। পৃথিবীর অনেক না- মানুষ বাসিন্দারা মানুষের অত্যাচারে ক্রমাগত কোনঠাসা হতে হতে বিলুপ্ত হয়ে গেছে আর বাকিরা কোনোরকমে টিকে আছে। মানুষ বড়ো বড়ো বাঁধ তৈরী করেছে নদী জলশূণ্য হয়ে গেছে, জলজ প্রাণ বৈচিত্র্য হারিয়ে গেছে, ভিটে মাটি জীবন জীবিকা হারিয়ে গেছে নদীর পাড়ের অসংখ্য প্রান্তিক মানুষের। দুশতকে মানুষ দুর্নিবার গতিতে এগিয়েছে - ডিনামাইট পাহাড় ভেঙেছে, খনি থেকে আকর উঠেছে, মহাকাশে স্যাটেলাইট বসেছে, যোগাযোগ দুনিয়ায় বিপ্লব হয়েছে আরো কত কী, কিন্ত তার সাথে মানুষ ও অসংখ্য জীবের বাসভূমি বসুন্ধ্ররার ক্ষতি হয়েছে অপূরনীয়। কী দিয়ে পূরণ হবে এ ক্ষতি? ভালবাসা দিয়ে, সহমর্মিতা দিয়ে। যেদিন সব মানুষ মেনে নেবে এই পৃথিবীতে তার সম অধিকার সকল জীবের, বিশ্বাস করবে এই পৃথিবী নামক নীল গ্রহটা আমাদের সকলের বাড়ি সেদিন থেকেই পৃথিবী সুস্থ হবে। গত প্রায় একমাসে, COVID-19 -এর জন্য পৃথিবী জোড়া লকডাউন প্রমান করেছে মানুষ একটু থেমে থাকলে জীবধাত্রী বসুন্ধরা কত ভালো থাকে। আমরা যদি প্রতিদিনের জীবনের ব্যস্ততা থেকে মুখ ফিরিয়ে আমাদের না-মানুষ প্রতিবেশীদের কথা একটু ভাবি, তাদের একমুঠো খাবার দিই, কী গাছটাকে বাঁচিয়ে তুলি, জীবনের প্রয়োজনটা একটু কমিয়ে নিই, অপচয় কম করি, সারারাত তীব্র আলো জ্বালার আগে একবার ভাবি পাখিদের ঘুমাতে কষ্ট হয় - এরকম ছোট ছোট কাজগুলোই হয়তো পৃথিবীর অসুখ সারবে। পৃথিবীকে ভালোবাসলেই নতুন যুগের সব গ্রেটা থুনবার্গরা ভালো থাকবে, আনন্দে থাকবে।
মোট পৃষ্ঠাদর্শন
বুধবার, ২২ এপ্রিল, ২০২০
মঙ্গলবার, ২১ এপ্রিল, ২০২০
ভিড়তন্ত্র
ভিড় - নামহীন মানুষের জটলা জনবহুল এলাকায় যেকোনো সময় জড়ো হয় কারনে, অকারনে। যুক্তিপূর্ন আলোচনার চাইতে গুজবেই ভিড়ের অনেক বেশি আস্থা। অনেক সময়ই এই ভিড় উন্মত্ত জনতায় পরিনত হয় কোনো কারন ছাড়াই। এমন নয় যে শুধু লেখাপড়া না জানা লোকেরাই বা কম লেখাপড়া জানা মানুষেই ভিড় তৈরী করে, শিক্ষিত মানুষও সামিল হয় নির্দ্বিধায়। ভিড়ের মূল আনন্দ নিপীড়নের তা সে লোকালয়ে ঢুকে আসা বন্য জন্তুই হোক বা সন্দেহভাজন ব্যক্তি বিশেষ। সভ্যতার আদিকাল থেকেই এই ভিড়তন্ত্র খুব বলশালী। কখনো কোনো মহিলাকে ডাইনি সন্দেহে তো কখনো পথভোলা ভবঘুরেকে ছেলেধরা সন্দেহে পিঠিয়ে মারে। এই ভিড় যেকোনো নিরীহ বোকাসোকা মানুষকেও নৃশংস খুনী করে তোলে, ভিড় জানে তার অবয়বহীনতা তাকে শাস্তি থেকে রক্ষা করবে। এই ভিড় যখন ধর্মবিদ্বেষ বা জাতি বিদ্বেষের রসদ পায় তখন সে জাঁকিয়ে বসে সমাজে আর দাবি করতে থাকে ভিড়ের উৎপাত হল সমাজের স্বতঃস্ফুর্ত বহিঃপ্রকাশ। এখন সোশাল মিডিয়াকে ভিড়তন্ত্র ব্যবহার করতে শুরু করেছে তাদের নৃশংস নিপীড়নের দর্শক বৃদ্ধি করতে, আরো ভিড় তৈরীতে। নানা স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী নিজেদের উদ্দেশ্যে এই ভিড়ের উন্মত্তাকে ব্যবহার করতে শুরু করেছে। কিন্তু এখন সময় হয়েছে ভিড়তন্ত্রকে নিয়ন্ত্রন করার নয়তো এই ভিড়তন্ত্র আমাদের নিয়ন্ত্রন করবে। আমরা আইনের শাসনের পূর্ববর্তী যুগে ফিরে যাব।
শনিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২০
করোনার গ্রাসে আমার দেশ
সারা বিশ্বের মত আজ আমার দেশ ভারতবর্ষেও করোনা নামক রোগ দাপিয়ে বেড়াচ্ছ, চারিদিকে ভয়, অবিশ্বাস আর অনিশ্চিত ভবিষ্যতের আশঙ্কা। ভয় রোগ ছাড়া রুটি রুজিরও। দরিদ্র মানুষের ভয় আরো বেশি। ক্ষুধা, আশ্রয়হীনতা ইতিমধ্যেই থাবা বসিয়েছে তাদের জীবনে। কোটি, কোটি পরিযায়ী শ্রমিক, ছোট চাষী, ভূমিহীন কৃষি শ্রমিক, পথবাসী মানুষ, কাগজকুড়ানি - এমন অগুনতি সমাজের প্রান্তিক মানুষ সব চাইতে বেশি কষ্ট পাচ্ছে। তাদের এই অসহায়তার ছবি অনেকদিন পর জানান দিয়েছে এই সমাজে তারা বিজ্ঞাপিত না হয়ে থাকলেও, প্রায় অদৃশ্য হলেও তারাই এই সমাজের পিলসুজ। সভ্যতার আলোক তারাই বহন করে। এই বঞ্চিত মানুষগুলোই সভ্যতাকে সচল রাখে। খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, সুচিকিৎসা, সৌহার্দ্য দিয়ে জনকল্যানকামী রাষ্ট্র কতখানি পারবে ধনী দরিদ্র নির্বিশেষে নানা ধর্ম, বর্ণ, ভাষার এই বিশাল দেশকে আগলে রাখতে সেটাই দেখার।আমার শহর 'রেড+ জোনে', এখানে অটো চালক, ই-রিকশা চালক, ফুচকাওয়ালা রুজির টানে সবাই সবজি বিক্রেতা। আজ দুধ সংগ্রহে গিয়ে দেখি পাড়ার অনেক স্বচ্ছল মানুষ বস্তিতে মানুষদের সাহায্য প্রাপ্তিকেও বাঁকা চোখে দেখছে। তবে নানা সংস্থা, ধর্মীয় সংগঠন, কিছু সাধারণ মানুষ নিজেদের মতো করে সাহায্যের হাত বাড়াচ্ছে এটাই স্বস্তির। এই যুদ্ধে মানুষ ও মনুষ্যত্ব দুই জয়লাভ করুক এই প্রার্থনা।
এতে সদস্যতা:
পোস্টগুলি (Atom)