মোট পৃষ্ঠাদর্শন

মঙ্গলবার, ১০ মে, ২০২২

আমার আজকের স্বদেশ ও রবীন্দ্রনাথের ঘরে বাইরে উপন্যাস

আমার আজকের স্বদেশ বড়ো অস্থির,পারস্পরিক সহাবস্থানে নানা প্রশ্নচিহ্ন। দেশপ্রেমের নানা ব্যাখ্যা নিয়ে যখন চারপাশ বিতর্কে তোলপাড় তখন রবীন্দ্রনাথের ঘরে বাইরে উপন্যাস আমাকে স্বদেশ ভাবনা সংক্রান্ত প্রায় সব প্রাসঙ্গিক উত্তর টীকাটিপ্পনী সহ ব্যাখ্যা করে আমায় সতর্ক করল। এই উপন্যাসের তিন মুখ্য চরিত্র নিখিলেশ, বিমলা, সন্দীপ যেন স্বদেশ ভাবনার তিনটি ধারা যারা আজও এই দেশে একই ভাবে সজীব ও ক্রিয়াশীল। সন্দীপের মতো নেতারা আজও মানুষকে নেতিবাচক উন্মাদনায় ক্ষেপিয়ে সমাজের সম্প্রীতির বুননকে চ্ছিন্ন বিচ্ছিন্ন করে কোনঠাসা করছে নিখিলেশের মতো গঠনমূলক,মানবদরদী, দেশহিতৈষীকে। অধিকাংশ শিক্ষিত সম্পন্ন মানুষ যেন বিমলার প্রতিনিধিত্ব করে। সন্দীপ স্বদেশপ্রেমের নামে যে বিদ্বেষ, উপদ্রবের আগুন জ্বালিয়ে তোলে সেই আগুনে ব্যক্তিগত, গোষ্ঠীগত, সামাজিক সব সম্পর্কই ছাড়খার হয় অথচ সে থাকে নিরাপদ আর সেই বিদ্বেষের আগুন নেভাতে নিজের জীবন বাজি রাখে নিখিলেশ। আজ আমার স্বদেশেরও অনেক নিখিলেশের প্রয়োজন। একমাত্র নিখিলেশের মতো মানুষদের গঠনমূলক,উদার, গনতান্ত্রিক স্বদেশ ভাবনার গভীরতায়ই আমার দেশের সাংস্কৃতিক ও ধার্মিক বৈচিত্র্যকে আশ্রয় দিতে পারে। মানুষের সাথে মানুষের লড়াই লাগার কালে নিখিলেশের, তার শিক্ষক চন্দ্রনাথ বাবুকে আজ বড়ো প্রয়োজন না হলে বিমলা, অমূল্যের মতো সরল সাধারণ মানুষ যারা সন্দীপের মতো মানুষের বানিয়ে তোলা 'আইডিয়া' এর আগুন নিয়ে খেলার অংশ হয়ে সব হারিয়ে বসেছে তারাই সেই মারন আগুন নেভাতে কার কাছে আশ্রয় চাইবে। রবীন্দ্রনাথের ঘরে বাইরে উপন্যাস গঠনমূলক ও ধ্বংসাত্মক স্বদেশ ভাবনা দুইয়ের চুলচেরা বিচার করে যা আজ শতবর্ষ পার করেও আমার দেশীয় নেতিবাচক স্বদেশ ভাবনাকে চিহ্নিত করে দেয় অতিসহজে,বলে দেয় পরিত্রাণের পথ।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন